আহ্মদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্, আমীরুল মু’মিনীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ২১শে জানুয়ারি, ২০২২ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় সাম্প্রতিক ধারা অনুসরণে নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীদের বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। এ খুতবায় হযরত আবু বকর (রা.)’র ধারাবাহিক স্মৃতিচারণের ধারা অব্যাহত রাখেন রাখেন এবং বিশেষভাবে বদর ও উহুদের যুদ্ধ তাঁর বীরত্বপূর্ণ ভুমিকার কথা সবিস্তারে বর্ণনা করেন।
তাশাহ্হুদ, তাআ’ঊয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) বলেন, হযরত আবু বকর (রা.)’র স্মৃতিচারণ চলছে। মদীনা গিয়ে মহানবী (সা.) সর্বপ্রথম যে কাজটি করেন তা হল মসজিদ নির্মাণ। মহানবী (সা.)-এর উট যেখানে গিয়ে বসেছিল, তা ছিল সাহল ও সুহায়ল নামক দু’জন এতীম মুসলমান বালকের। মহানবী ১০ দীনার দিয়ে সেই জমি ক্রয় করেন যা ছিল এর প্রচলিত বাজারমূল্য; এই মূল্য হযরত আবু বকর (রা.)’র পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হয়। জমিটিকে প্রস্তুত করার পর মহানবী (সা.) দোয়া করে এখানে মসজিদে নববীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন; তিনি (সা.) নিজ হাতে প্রথমে একটি ইট রাখেন, এরপর তাঁর (সা.) নির্দেশে হযরত আবু বকর (রা.) সেই ইটের পাশে আরেকটি ইট রাখেন, এরপর যথাক্রমে হযরত উমর (রা.) ও হযরত উসমান (রা.)-ও ইট রাখেন। ৭ম হিজরীর মহররম মাসে মহানবী (সা.) খায়বারের যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে মসজিদে নববীর সম্প্রসারণ করান। একটি বর্ণনা থেকে জানা যায়, মহানবী (সা.) অন্যান্য নিকটজনদের মত হযরত আবু বকর (রা.)-কেও মসজিদের নিকটে বাড়ি বানানোর জন্য জমি প্রদান করেছিলেন।
মহানবী (সা.) হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত খারজা বিন যায়েদ (রা.)’র মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করেছিলেন, কোন কোন বর্ণনামতে হযরত আবু বকর (রা.)’র ধর্মভাই ছিলেন হযরত উমর (রা.)। আল্লামা ইবনে আসাকির- এর মতে, মহানবী (সা.) মক্কায় হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত উমর (রা.)-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করেছিলেন। মদীনায় এসে মক্কার ভ্রাতৃত্ব বদলে নতুন করে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেন, মক্কার দু’টো ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক কেবল অপরিবর্তিত থাকে; মহানবী (সা.) ও হযরত আলী (রা.) এবং হযরত হামযা (রা.) ও হযরত যায়েদ বিন হারসা (রা.)-এর মধ্যকার ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক। বুখারী শরীফের ভাষ্যকার আল্লামা কাস্তালানীর মতে, মদীনায় হযরত আনাস বিন মালেক (রা.)’র বাড়িতে ৫০জন মুহাজির ও ৫০জন আনসারের মধ্যে মহানবী (সা.) পুনরায় ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।
বদরের যুদ্ধে হযরত আবু বকর (রা.)’র বিশেষ ভূমিকা ছিল। এই যুদ্ধ ২য় হিজরীর রমযান মাসে সংঘটিত হয়। এই অভিযানে মুসলমানদের মাত্র ৭০টি উট ছিল, সে কারণে যুদ্ধযাত্রায় তিনজন করে সাহাবী একটি উটে পালাক্রমে চড়তেন। হযরত আবু বকর (রা.), হযরত উমর (রা.) ও হযরত আব্দুর রহমান বিন অওফ (রা.) একই উটে পালাকরে আরোহণ করতেন। মহানবী (সা.) প্রথমে আবু সুফিয়ানের কাফেলার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন, যা একটি বাণিজ্য-কাফেলা ছিল। পথিমধ্যে মহানবী (সা.) সংবাদ পান, কুরাইশরা তাদের বাণিজ্য-কাফেলার সুরক্ষার জন্য মক্কা থেকে আরেকটি সৈন্যদল নিয়ে রওয়ানা হয়েছে। মহানবী (সা.) সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করেন- তারা কোন কাফেলার মুখোমুখি হতে চান। তখন সাহাবীদের মধ্যে একদল বলেন, তারা বাণিজ্য-কাফেলার সাথে লড়তে চান, তিনি (সা.) যেহেতু পূর্বে তাদের কাছে সৈন্যদলের উল্লেখ করেননি তাই তারা সেভাবে প্রস্তুত হয়ে আসেননি ইত্যাদি। মহানবী (সা.) এমন কথায় অসন্তুষ্ট হন এবং তার চেহারায় তা প্রকাশ পায়। হযরত আবু আইয়ূব (রা.)’র মতে এই প্রেক্ষিতেই সূরা আনফালের ৬নং আয়াত অবতীর্ণ হয় যেখানে আল্লাহ্ বলেছেন-
كَمَآ أَخۡرَجَكَ رَبُّكَ مِنۢ بَيۡتِكَ بِٱلۡحَقِّ وَإِنَّ فَرِيقً۬ا مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ لَكَـٰرِهُونَ
অর্থাৎ, ‘যেভাবে তোমার প্রভু তোমাকে পুণ্য উদ্দেশ্যে তোমার বাড়ি থেকে বের করেছেন, অথচ মু’মিনদের মধ্যে একদল এটি অপছন্দ করছিল।’
তখন হযরত আবু বকর (রা.) দাঁড়ান এবং মহানবী (সা.)-এর পক্ষে খুব সুন্দর বক্তব্য দেন, এরপর হযরত উমর (রা.) ও হযরত মিকদাদ বিন আসওয়াদ (রা.)ও বক্তব্য দেন। হযরত মিকদাদ (রা.)’র বক্তব্য অত্যন্ত প্রসিদ্ধ; তিনি বলেছিলেন-
“হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্ আপনাকে যেদিকে নিয়ে যেতে বলেছেন সেদিকেই আমাদের নিয়ে চলুন, আপনি যদি আমাদেরকে বারকুল গিমাদ-ও নিয়ে যান, তবে আমরা সেখানেও যেতে প্রস্তুত”।
বারকুল গিমাদ ছিল সমুদ্র তীরবর্তী একটি শহর। তাদের বক্তব্যে মহানবী (সা.) অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন ও সৈন্যদল অভিমুখে যাত্রা করেন।
বদরের ময়দানে আনসার-নেতা সা’দ বিন মু’আয (রা.)’র পরামর্শে মহানবী (সা.)-এর জন্য একটি শামিয়ানা টানানো হয়। হযরত সা’দ মহানবী (সা.)-কে নিবেদন করেন, আপনি এখানে বসুন, আমরা আল্লাহ্র নাম নিয়ে শত্রুর সাথে যুদ্ধ করব। মহানবী (সা.) ও হযরত আবু বকর (রা.) রাতে সেখানেই অবস্থান করেন; একটি বর্ণনামতে হযরত আবু বকর (রা.) তরবারি-হাতে সারারাত তাঁবুর বাইরে পাহারা দিয়েছিলেন। মহানবী (সা.) সারারাত দোয়ায় রত থাকেন; অবশিষ্ট সবাই পালাক্রমে ঘুমালেও তিনি (সা.) একটুও ঘুমাননি। হযরত আলী (রা.)’র একটি বর্ণনা থেকে জানা যায়, সাহাবীদের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী ছিলেন হযরত আবু বকর (রা.); কারণ বদরের যুদ্ধের সময় যখন বলা হয়- মহানবী (সা.)-এর প্রহরায় কে থাকবে যে নিজের প্রাণ দিয়ে হলেও শত্রুদের আক্রমণ থেকে তাঁকে (সা.) নিরাপদ রাখবে- তখন আবু বকর (রা.) তরবারি-হাতে বীরদর্পে এগিয়ে আসেন এবং মহানবী (সা.)-এর প্রহরায় দণ্ডায়মান হন। বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানা যায়, মহানবী (সা.) অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে ক্রন্দনের সাথে দোয়া করেই যাচ্ছিলেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَنْشُدُكَ عَهْدَكَ وَوَعْدَكَ- اللهُمَّ إِنْ تُهْلِكْ هَذِهِ الْعِصَابَةَ مِنْ أَهْلِ الْإِسْلَامِ ، لَا تُعْبَدْ فِي الْأَرْضِ
অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ্, আমি তোমাকে তোমার অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির দোহাই দিচ্ছি! হে আল্লাহ্, মুসলমানদের এই দলটি যদি আজ এখানে ধ্বংস হয়, তবে পৃথিবীতে তোমার ইবাদত করার মতো কেউ থাকবে না!’
মহানবী (সা.) এত বিচলিত হয়ে দোয়া করছিলেন যে, তাঁর (সা.) চাদর বারবার লুটিয়ে পড়ছিল ও হযরত আবু বকর (রা.) তা তুলে দিচ্ছিলেন; তিনি (রা.) খুবই বিচলিত হয়ে মহানবী (সা.)-কে অনুরোধ করেন, ‘এবার আপনি শান্ত হোন! আপনি যথেষ্ট দোয়া করেছেন!’ মহানবী (সা.) বাইরে এসে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে প্রাপ্ত সুসংবাদ শোনান-
سَيُہۡزَمُ ٱلۡجَمۡعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُرَ
অর্থাৎ, এই সৈন্যদল পরাজিত হবে ও পিঠ দেখিয়ে পালাবে।
হযরত উমর (রা.)’র বর্ণনামতে, হযরত আবু বকর (রা.)’র কথার প্রেক্ষিতে সূরা আনফালের ১০নং আয়াত অবতীর্ণ হয়। যুদ্ধের পূর্বে মহানবী (সা.) সাহাবীদের এ-ও বলেছিলেন, কুরাইশদের চাপে পড়ে কিছু ব্যক্তি অনিচ্ছাসত্ত্বেও যুদ্ধে আসতে বাধ্য হয়েছে, আবার এমন কিছু লোকও তাদের সাথে আছে যারা মক্কায় মুসলমানদের বিপদের দিনে পাশে ছিল; আজ সেই অনুগ্রহের প্রতিদান দেয়া তাদের কর্তব্য। তিনি (সা.) বিশেষভাবে এই দুই শ্রেণী থেকে দু’জনের নাম বলে দেন- আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব ও আবুল বাখতারী; তবে অনিবার্য পরিস্থিতির কারণে আবুল বাখতারী মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায়নি, অবশ্য মৃত্যুর পূর্বে সে জানতে পেরেছিল- মহানবী (সা.) তাকে হত্যা করতে বারণ করেছিলেন।
হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) ও মুসলেহ্ মওউদ (রা.) বদরের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মহানবী (সা.)-এর ব্যাকুলচিত্তে দোয়া করার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছেন, আল্লাহ্ তা’লা তাঁকে (সা.) বিজয়ের সুসংবাদ পূর্বেই দিয়ে রেখেছিলেন এবং ঐশী সমর্থনের বিভিন্ন লক্ষ্মণও প্রকাশ করেছিলেন, তা সত্ত্বেও মহানবী (সা.) নিজেকে উজাড় করে দোয়া করছিলেন যা দেখে হযরত আবু বকর (রা.) বিচলিত হয়ে পড়েন এবং তাঁকে (সা.) ক্ষান্ত দিতে বলেন। নবী (সা.) বলেছিলেন, যদিও আল্লাহ্ তা’লা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু এ-ও মনে রাখতে হবে, আল্লাহ্ হলেন ‘আল্ গণী’ তথা অমুখাপেক্ষী; তিনি নিয়মের অধীন বা এটি করতে বাধ্য নন। আল্লাহ্ তা’লা সম্পর্কে এই পূর্ণ মা’রেফাত বা তত্ত্বজ্ঞানের কারণেই মহানবী (সা.)-এর তাক্ওয়া বা খোদাভীতি এই উচ্চমানে অধিষ্ঠিত ছিল, যা আমাদের সবার জন্য শিক্ষণীয়।
বদরের যুদ্ধে হযরত আবু বকর (রা.)’র বড় ছেলে আব্দুর রহমান কাফিরদের পক্ষ হয়ে লড়তে এসেছিল। পরে সে ইসলামগ্রহণের সৌভাগ্য লাভ করে। একদিন সে হযরত আবু বকর (রা.)-কে বলছিল, বদরের দিন সে তাকে হত্যা করার সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু সে তা না করেনি। হযরত আবু বকর (রা.) তাকে উত্তর দেন, আসলে আল্লাহ্ তাকে ঈমান দান করতে চেয়েছেন বলে সে বেঁচে গিয়েছে, নতুবা সে হযরত আবু বকর (রা.)’র সামনে পড়লে তিনি (রা.) তাকে অবশ্যই হত্যা করতেন। বদরের যুদ্ধের পর মদীনায় ফিরে যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে করণীয় বিষয়ে মহানবী (সা.) হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত উমর (রা.)-এর সাথে পরামর্শ করেছিলেন। হযরত আবু বকর (রা.) তাদেরকে মুক্তিপণ নিয়ে মুক্ত করার পরামর্শ দেন, আর হযরত উমর (রা.) তাদেরকে হত্যা করার পরামর্শ দেন। তিনি (সা.) হযরত আবু বকর (রা.)’র পরামর্শ গ্রহণ করেন, পরবর্তীতে এর সমর্থনে আয়াতও অবতীর্ণ হয়।
মদীনায় একবার হযরত আবু বকর (রা.), হযরত বেলাল (রা.) সহ কয়েকজন মুহাজির সাহাবী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রচণ্ডজ্বরের ঘোরে তারা প্রলাপ বকতেন ও জন্মভূমি মক্কাকে নিয়ে কবিতা আওড়াতেন। মহানবী (সা.) তাঁদের কষ্ট দেখে আল্লাহ্র কাছে দোয়া করেন, মদীনা যেন তাঁদের কাছে মক্কার মতই প্রিয় হয়ে যায়, মদীনার সব রোগ-বালাই দূর হয়ে যায় এবং তা তাঁদের জন্য কল্যাণমণ্ডিত ও স্বাস্থ্যকর হয়ে যায়।
৩য় হিজরীতে সংঘটিত উহুদের যুদ্ধেও হযরত আবু বকর (রা.)’র বিশেষ ভূমিকা ছিল। উহুদের যুদ্ধ নিয়ে মহানবী (সা.) পরামর্শের প্রাক্কালে নিজের একটি স্বপ্নের কথা ও তার ব্যাখ্যা শুনিয়েছিলেন, যার প্রেক্ষিতে বয়োজ্যেষ্ঠরা মদীনার ভেতরে থেকে যুদ্ধ করার পরামর্শ দেন এবং মহানবী (সা.)ও তা সমর্থন করেন, কিন্তু যুবকরা এগিয়ে গিয়ে যুদ্ধ করার বিষয়ে জোর দিতে থাকেন। তাই মহানবী (সা.) তাদের কথা মেনে নিয়ে প্রস্তুতি নিতে বাড়ির ভেতর যান। যুবকদের যখন বুঝানো হয়, মহানবী (সা.)-এর ওপর তাদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া ঠিক হয়নি, তখন তারা তাঁর কাছে ভুল স্বীকার করে মদীনার ভেতরে থেকে যুদ্ধ করার পক্ষে মত দেন। কিন্তু মহানবী (সা.) বলেন, “আল্লাহ্র নবী বর্ম পরে ফেলার পর তা আর খোলেন না”। অতঃপর মুসলিম বাহিনী উহুদ প্রান্তর অভিমুখে অগ্রসর হয়। এই যুদ্ধে মহানবী (সা.) নিজের তরবারি হযরত আবু দজানা (রা.)-কে প্রদান করেছিলেন, যিনি এর যথার্থ ব্যবহার করেন। যুদ্ধে গিরিপথ দিয়ে কাফিরদের পাল্টা আক্রমণের ফলে এক পর্যায়ে মুসলমানরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন ও সাময়িক পরাজয়ের শিকার হন, অনেক সাহাবী শাহাদাতবরণ করেন। এমনকি মহানবী (সা.)-এর মৃত্যুর গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। কাফিরদের উপর্যুপরি আক্রমণে মহানবী (সা.)-এর জীবন শংকার মুখে ছিল। তখন এক পর্যায়ে পরম নিষ্ঠাবান কয়েকজন সাহাবী মৃত্যুর শর্তে তাঁর হাতে বয়আ’ত করেন তথা মরণপণ লড়াই করার অঙ্গীকার করেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন, হযরত আবু বকর (রা.), হযরত উমর (রা.), হযরত তালহা (রা.), হযরত যুবায়ের, হযরত সা’দ (রা.), হযরত সাহল বিন হুনায়ফ (রা.), হযরত আবু দজানা (রা.) প্রমুখ। মহানবী (সা.)-কে রক্ষা করতে তারা নিজেদেরকে ঢালরূপে রেখেছিলেন; হযরত আবু দজানার (রা.)’র সারা দেহ ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গিয়েছিল, হযরত তালহা (রা.)’র হাত তীরের আঘাতে আঘাতে পঙ্গু হয়ে যায়, মহানবী (সা.)-এর চোয়ালে বিদ্ধ হওয়া শিরস্ত্রাণের লোহার আংটা বের করতে গিয়ে হযরত আবু উবায়দাহ্ (রা.)’র দাঁত পড়ে যায়, তাঁকে (সা.) রক্ষা করতে কয়েকজন সাহাবী সানন্দে শাহাদাতও বরণ করেন। হুযূর (আই.) এ সংক্রান্ত নাতিদীর্ঘ আলোচনা করেন এবং স্মৃতিচারণের এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে বলেন।
এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।